নুসরাতের খুনিদের বাঁচাতে বিভিন্নভাবে তৎপরতা চলছে: রিজভী
ডিটেকটিভ নিউজ ডেস্ক
আগুনে পুড়িয়ে হত্যা করা ফেনীর সোনাগাজীর মাদ্রাসাছাত্রী নুসরাত জাহান রাফির খুনিদের বাঁচাতে বিভিন্নভাবে তৎপরতা চলছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম-মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। তিনি বলেন, এ ধরনের খবর এরইমধ্যে প্রকাশিত হচ্ছে। বিভিন্ন দিক থেকে হত্যা মামলার আসামি ও তাদের দোসরদের পক্ষে একটি গ্রুপ মাঠে নেমেছে। গতকাল শনিবার বেলা সাড়ে ১১টায় নয়াপল্টনে দলীয় কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ অভিযোগ করেন। রিজভী বলেন, সোনাগাজীর সেই মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগ সভাপতি শাহাদাত হোসেন শামীম, যুবলীগ নেতা নুর উদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, আবদুল কাদের ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ দৌলা, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মাকসুদুল হক ও প্রভাষক আবছার উদ্দিনের পক্ষে সাফাই গাইতে শুরু করেছে ওই গ্রুপটি। তারা রাজনৈতিক নেতাদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে ধরনাও দিচ্ছে বলে গণমাধ্যমে খবর বেরিয়েছে। ঘটনায় জড়িত সবাই ক্ষমতাসীন দলের নেতা-কর্মী। তিনি বলেন, দেশের মানুষ সবাই জানে ফেনী হলো ক্ষমতাসীন দলের সন্ত্রাসীদের নিরাপদ জনপদ। সেখানে আওয়ামী লীগের গডফাদারদের ছত্রছায়ায় বিভিন্ন সন্ত্রাসী কার্যক্রম চলে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। তারা তাদের নিজেদের দলের নেতাকেই আগুনে পুড়িয়ে ঝলসে দিয়েছে। সন্ত্রাসীদের অভয়ারণ্য হিসেবে একসময় সারাদেশে আলোচিত হওয়া ফেনীতে রাজনৈতিক হত্যা, গুম, অপহরণ, দিনে-দুপুরে অস্ত্র উঁচিয়ে ছিনতাই, টেন্ডারবাজি, বালুমহাল লুট, বাসস্ট্যান্ডে চাঁদাবাজি, আধিপত্য বিস্তারে অস্ত্রের প্রকাশ্য মহড়া, সোনার দোকানে ডাকাতি, ব্যাংকের টাকা ছিনতাই ছিলো এখানকার নিত্যনৈমিত্তিক ঘটনা। প্রধানমন্ত্রীকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আপনাকে বলতে চাই, এই হত্যা মামলার আসামি ও তাদের দোসরদের পক্ষে একটি গ্রুপ মাঠে নেমেছে। এই গ্রুপটি কারা আপনি সব জানেন। সবসময় কাজ হচ্ছে- উদোর পি-ি বুদোর ঘাড়ে চাপানো। এটা সব সময় করে এসেছেন। ফেনীতে এমনিতেই বিএনপির নেতাকর্মীরা থাকতেই পারে না, ঢাকা বা অন্যত্র অবস্থান করছেন। কিন্তু জনদৃষ্টিকে বিভ্রান্ত করতে, মানুষের চোখকে অন্যদিকে ফেরানোর জন্য প্রশাসনকে ব্যবহার করার চেষ্টা করা হচ্ছে। কিন্তু সত্যকে আপনি আড়াল করতে পারেননি। তিনি বলেন, সোনাগাজীর সেই মাদ্রাসা শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি শাহাদাৎ হোসেন শামীম, যুবলীগ নেতা নুরউদ্দিন, জাবেদ হোসেন, জোবায়ের আহমেদ, আবদুল কাদের ওই মাদ্রাসার অধ্যক্ষ সিরাজ উদ্দৌলা, সোনাগাজী পৌর কাউন্সিলর ও পৌর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মকসুদুল হক ও প্রভাষক আবছার উদ্দিনের পক্ষে সাফাই গাইতে শুরু করেছে ওই গ্রুপটি। ঘটনায় জড়িত সবাই ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মী। এর কোনো উত্তর আছে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী? আপনি তো মুখস্ত কবিতার মতো বলে যান অনর্গল মিথ্যা কথা। বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে বিএসএমএমইউ-তে ভর্র্তি করলেও সরকার নিয়ন্ত্রিত ওই হাসাপাতালে তার প্রয়োজনীয় চিকিৎসা হচ্ছে না অভিযোগ করে রিজভী বলেন, খালেদা জিয়ার প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা হচ্ছে না। ডায়াবেটিস নিয়ন্ত্রণে নেই, অষ্ট্রীয়-আর্থ্রাইটিসের ব্যথা এখন তীব্র আকার ধারণ করেছে। বিএসএমএমইউ-তে পরীক্ষা-নিরীক্ষার জন্য কোনো আধুনিক যন্ত্রপাতিও নেই। আমরা শুরু থেকেই বিএনপি চেয়ারপারসনকে তার পছন্দ অনুযায়ী বিশেষায়িত হাতপাতালে চিকিৎসার দাবি জানিয়ে আসছি। কিন্তু সরকার তা আমলে নেয়নি, বরং তাকে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে বলে মিথ্যাচার করছেন, যা পীড়াদায়ক। তিনি অবিলম্বে খালেদা জিয়ার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করেন। একই সঙ্গে তাকে তার পছন্দের হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে সুযোগ দেওয়ার দাবি জানান। সংবাদ সম্মেলনে দলের ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, কেন্দ্রীয় নেতা আবদুস সালাম আজাদ, মুনির হোনেন, আবদুল আউয়াল খান, কাজী বাশার, ইউনুস মৃধা, গোলাম মূর্তজা তুলা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।